রহমত নিউজ 22 December, 2023 10:09 PM
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বদলে ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা চায় ভারত। তারা গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি বহুমত ও সহনশীলতার নীতিকে অগ্রাহ্য করে প্রতিবেশী দেশের স্থিতিশীলতা, অন্য কথায় বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকাকে অপরিহার্য গণ্য করছেন গণতন্ত্রকে বর্জন করে। শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, অতীতের তিনটি ভুয়া নির্বাচনের মতোই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিল্লির প্রকাশ্য প্রভাবে বাংলাদেশের জনগণ উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা বৈঠক বসছে দিল্লিতে। বাংলাদেশের নাগরিকদের ভাগ্য নির্ধারণের সুযোগ বাংলাদেশের নাগরিকদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ারই অংশ। যা বাংলাদেশের জন্য সম্মানজনক নয়। ভারতীয় কূটনীতিকরা বাংলাদেশে এসে প্রকাশ্যে শেখ হাসিনার একতরফা ডামি নির্বাচনের পক্ষে বক্তব্য রাখছেন। বিএনপিসহ অধিকাংশ দলবিহীন নির্বাচনে তারা সমর্থন দিচ্ছেন। দিল্লি থেকে বলা হচ্ছে, তারা বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা চান। তার মানে গণতন্ত্র তাদের কাছে এখন অপাঙ্ক্তেয়।
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মতো দেশটির গণমাধ্যমে বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকরা যেসব মতামত প্রকাশ করছেন, তা প্রায় সবই তাদের সরকারি দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতির পুনরাবৃত্তি ছাড়া কিছু নয়। তাদের কথায় স্পষ্ট যে, এখানে তারা কি লেন্দুপ দর্জি চান? দিল্লি তার নিজ স্বার্থের জন্য আমাদের দেশের গণতন্ত্র হত্যায় মূল ভূমিকা পালন করে আমাদের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে? জনগণের প্রশ্ন দিল্লি কি বাংলাদেশের জনগণের সাথে সম্পর্কের পরিবর্তে একটি গণবিরোধী ভোট ডাকাত দলের সাথে সম্পর্ক চান? তবে দেশের ১৮ কোটি জনগণ চায় দিল্লি সৎ প্রতিবেশী সুলভ আচরণ করুক। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাক। জনগণের ভোটাধিকার গলাটিপে হত্যার পক্ষে অবস্থান পরিবর্তন করুক।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তার পূর্বনির্ধারিত ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে গণতান্ত্রিক বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার কৌশল হিসাবে নাশকতা ও জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করার পরিকল্পনা নিচ্ছে বলে নানাভাবে জানা যাচ্ছে। আমরা জানতে পেরেছি, একজন ডিআইজিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করার। এজন্য বিএনপি-জামায়াতের কয়েকজনকে তুলে নিয়ে রাখা হয়েছে। তাদেরকে দিয়ে জঙ্গি নাটক মঞ্চায়ন হতে পারে। পার্শ্ববর্তী দেশের পরিকল্পনায় ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের পূর্ববর্তী সময়েরই তারা জঙ্গি নাটক করে তাদের স্বার্থসিদ্ধি করেছিল। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পূর্ব মূহুর্তেও একই নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে পারে।
রিজভী বলেন, মেরুদণ্ডহীন দলদাস নির্বাচন কমিশন শেখ হাসিনার পাঠানো সিট বণ্টনের তালিকায় সীলমোহর দেয়ার জন্য একটি একতরফা নির্বাচনের নাটকের আয়োজন করেছে। এই নির্বাচন ঘিরে নির্বাচন কমিশনারদের কথাবার্তা-আচার-আচরণ রীতিমত হাস্যকর। গণভবনের সুতোয় পুতুলের মতো নাচছে ইসি। তারা প্রায়শ বিএনপিকেও হুমকি দিচ্ছেন। গোটা দেশের জনগণ জানে, কারা কারা এমপি হবেন সেই তালিকা হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান আজ বলেছেন, ‘রুহুল কবির রিজভীর কাছে যদি তালিকা থাকে প্রকাশ করতে বলেন।’ কি হাস্যকর কথা। তিনি সাধু হওয়ার অভিনয় করছেন। তিনি গণভবনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য মুখিয়ে আছেন আর তিনি জানেন না? এতো অর্বাচীনতার নাটক করে ভাবছেন জনগণ কিছু বোঝে না?